Header Ads

Breaking News
recent

গিটারিস্টের ভালোবাসা

রাতে ছাদে বসে গিটার বাজাচ্ছি। রাত প্রায় ১১টার উপর বাজে। কিন্তু গিটারে সুর তুলতে পারতেছি না। এমন রোমান্টিক সময়ে যদি গিটারে সুর না তুলতে পারি তাহলে কখন তুলবো।
সুর তুলতে না পারার কারনে নিজের কাছেও খারাপ লাগছে কারন সাড়াদিন অফিস শেষে যদি সামান্য গিটারে সুর না তুলতে পারি তাহলে কেমনটা লাগে। তাই রাগ নিয়ে উল্টা পাল্টা বাজাঁতে শুরু করলাম। হঠাৎ আমার পাশের ছাদ থেকে এক মেয়ের আওয়াজ আসলো....
-- এই যে গিটার বাজাতে না পারলে আগে শিখে আসুন তো। অযথা মানুষের ঘুমের সমস্যা করবে না।
-- আমার গিটারের কারনে কারো সমস্যা হচ্ছে না। শুধু এক মাত্র মহারানী তোমারই সমস্যা হচ্ছে।
-- হুহহ হচ্ছে তাই বলছি উল্টা পাল্টা বাজাবে না।
-- বাজাঁবো আরো একশো বার বাজাঁবো। তোমার মন চাইলে বাড়ি ছেড়ে পালাও তো।
-- হুহহ
রাগ দেখিয়ে চলে গেল মহারানী। এটা আর কেউ নয় আমার বিয়ে করা সহধর্মিনী বিথীকা। তবে আমরা সবাই বিথী বলেই ডাকে । আর এখন প্রশ্ন হলো, ও যদি আমার বউ হয় তাহলে অন্য বাড়ির ছাদে কেন?
.
আসলে আমাদের বাবা মায়ের পছন্দের বিয়ে। বাবার বন্ধুর মেয়ে হলো বিথী। আমাদের সামনের এলাকায় ওদের বাড়ি। ওরে আমি ওদের এলাকায় কয়েকবার দেখলেও তেমন একটা উৎসাহ দেখাই নি কোন কিছুতে। কারন ছোট থেকেই আমার ইচ্ছা বাবা মায়ের কথার বাইরে যাবো না। তাই কোন মেয়ের সাথে প্রেম করি নি।
বিথীর সাথে বিয়ে হয়েছে চার মাস হলো। তবে মাসে ২ বার ঝগড়া হবেই হবে। তবে ও রেগে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায়। তবে সেটা শুধু পাশের বাড়িতেই যায়। এবার কথা হলো, ও রেগে নিজের বাবার বাড়ি না গিয়ে পাশের বাড়িতে যায় কেন?
পাশের বাড়িতে যাওয়ার কারন হলো, ওই বাড়ির তিন তলায় ওর এক আন্টি ভাড়া থাকে। তাই কষ্ট করে নিজের বাড়ি না গিয়ে পাশের বাড়িতে চলে যায়। আর ওর আন্টির একটা মেয়ে আছে। ওর সাথে লেখাপড়া করে তাই এক সাথে বসে গল্প করে সময় কাটায় নয়ত এতখনে আমার কাছে চলে আসতো।
আর আজ সকালে ঝগড়া হয় ওর সাথে তাই আমি যখন অফিসের জন্য বের হই তখন ও তারাতারি আমার সামনে দিয়ে ওই বাড়িতে চলে যায়।যেন আমি এটা খেয়াল করি যে ও রাগ করছে। তবে আমি জানি ও রাগ করলেও একটু পরে বাসায় এসে সবার জন্য রান্না করছে। কারন রাতে বাসায় ফিরে যখন ডিনার করতে বসি তখন খাবার মুখে দিয়েই বুঝতে পারছি এটা বিথীর রান্না।
আজ সকালে ওর সাথে ঝগড়া হয়েছে একটা আজব বিষয় নিয়ে। বিথী বলে মাথায় তেল দিতে আর আমি বলি না দিবো না। আচ্ছা এখনকার যুগে কেউ মাথায় তেল দিয়ে অফিস যায়। এতে তো গেয়োঁ ভূত লাগে।
কিন্তু মহারানীর কথা হলো তেল না দিয়ে যেতে পারবো না। আমি তেল না দিয়েই চলে আসছি আর মহারানী সাড়াদিন রাগে ফুলে আছে। সমস্যা নেই আমি জানি রাতে ১২টার আগে ফোন আসবে ওরে বাসায় নিয়ে আসার জন্য।
মুখের কথা মুখেই রয়ে গেল আর মোবাইলটা বেজে উঠলো....
-- হুমমম বলো মহারানী।
-- এই যে রাজ সাহেব আমায় বাসায় নিয়ে যাবে না।
-- তাহলে মহারানীর রাগ কমছে।
-- আমার রাগে কি কারো যায় আসে। সকালে তো সে মাথায় তেল না দিয়েই চলে গেছে।
-- হয়ত ফোনের পাশে থাকা মেয়ে খেয়াল করে নি, আমি বাসায় আবার ফেরত এসে আমার তেল দিয়ে গেছি।
-- থাক আর বলতে হবে না। এবার তো আমায় নিয়ে যাও। এতো রাতে কি আমি একা একা আসবো।
-- একটু আগে তো ছাদে এসে আমায় শাশিয়ে গেলে। আবার আসো ছাদে। আমি এখনো আগের জায়গাতেই বসে আসি।
বলতে দেরি হলেও মেয়েটা ছাদে আসতে একটু দেরি হয় নি। হয়ত এতখন ছাদের সিড়িতে বসে ছিল,শুধু আমার ডাকার অপেক্ষায় ছিল।এসেই বলল....
-- ওই আমি পার হবো কি করে? যদি নিচে পড়ে যাই।
-- তাই তো। ওয়েট
আমি ছাদের মাঝে দাড়ালাম আর ওরে পাড় করে দিলাম। তারপর নিজেও ছাদে চলে আসলাম।
-- বিথী তুমি ছাদে আসতে বলায় এতো তারাতারি আসলে কি করে?
-- মনে হয় নিজে কিছু বুঝে না।
তাহলে আমার ধারনায় ঠিক। ও এতখন সিড়িতে আমার ডাকের জন্য অপেক্ষা করেছে। মেয়েটা খুব আবেগী। একটুতে কেদেঁ দেয় আবার দরকার হলে সবাইকে কাদিয়ে দেয়।
-- চলো মহারাণী রুমে চলো।
আমি হাটতে গেলাম কিন্তু ও চুপ করে দাড়িয়ে আছে। আর মাথাটাও নিচু করে দাড়িয়ে আছে। হঠাৎ আবার কি হলো...
-- ওই যাবে না।
-- ওই রাগ করে আছি বুঝো না। আগে রাগ ভাঙ্গাবে, পরে যাবো।
-- রাগ ভাঙ্গানো আর রুমে যাওয়াটা দুইবারে না করে যদি একবারে দুইটা কাজ করি।
ও আমার কথা শুনে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। আর আমি ওরে কোলে তুলে নিলাম। আমি জানি এতেই ওর রাগ কমে পানি হয়ে যাবে। এরপর ওরে কোলে করে রুমে নিয়ে আসলাম। আর যত রাগ অভিমান সব শেষ হয়ে গেল।
.
পরেদিন সকালে অফিসে যাবো বলে রেডি হচ্ছিলাম। তখনি মা রুমে আসলো...
-- কিরে অফিসে বের হবি নাকি?
-- হুমম। কেন কোন দরকার আছে?
-- আসলে তোর মামা ফোন দিছিল। তোর মামাতো ভাই দিশানের তো আগামী সপ্তাহেই বিয়ে তাই যেতে বলছে।
-- কিন্তু অফিস থেকে কি এতো দিনের ছুটি পাবো। আর যদি মামা বেশি জোর করে তাহলে তুমি,বাবা আর বিথী চলে যাও। আমি বিয়ের দিন পৌছেঁ যাবো।
-- তাহলে তোর রান্না বান্নার কি হবে?
-- আরে মা আমি মেসে থেকে যখন লেখাপড়া করেছি তখন তো অনেকবার রান্না করেছি। আর শুধু তো কয়টা দিনের ব্যাপার।
-- আচ্ছা তুই যা ভাল বুঝবি।
তারপর মা একটু পরে চলে গেল। আমি জানি এখন বিথী দৌড়ে আসবে। ও আমায় অনেক মিস করে আর আমিও কম করি না। ঠিক তাই ঘটলো, বিথী আমার কাছে এসে হাজির আর মা হয়ত বলেছিল। বিথী চুপ করে দরজার সামনে দাড়িয়ে মাথা নিচু করে দাত দিয়ে নখ কাটছিল। যতই বলি এটা না করতে, ও ততবার এটা করবেই। আমি ওরে কাছে ডাকলাম........
-- টাই টা কি একটু বেধেঁ দেওয়া যাবে।
ও চুপচাপ এসে টাইটা বেধেঁ দিতে লাগলো। যখন বাধাঁ শেষে ও চলে যাবে তখনই আমি ওরে জড়িয়ে ধরলাম। কিন্তু সেই শুধু দাতঁ দিয়ে নখ কাটছে।
-- কি হলো মহারাণীর মুখটা এতো ঘোমরা কেন? মনে হচ্ছে কালো মেঘ জমেছে।
-- জানি না।
-- আরে বোকা মেয়ে, যাও বিয়েতে যাও অনেক ভাল লাগবে।
-- হুহহ।
-- বাপরে বউটা আমার এত্তো অভিমান করেছে। চলো তোমায় একটা ছোট্ট হাসির গল্প বলি। একটা মহিলা পকেট মারার জন্য জেলে যায়। ওই মহিলা জেলের যেই কারাগারে ছিল, ওই কারাগারে ওনার সাথে আরেকটা মহিলা ছিল। তারা প্রায় দুই বছর এক সাথে কাটালো। তারপর একদিন এক মহিলায় মেয়াদ শেষ হলো। তখন সেই মহিলা কারাগার থেকে বার হয়ে একটা কথা বলল। যেটা শুনে দাড়িয়ে থাকা হাবিলদার জ্ঞান হারালো। এবার বলো তো ওই মহিলা এমন কি বলল যে হাবিলদার জ্ঞান হারালো?
-- কি বলল?
-- আরে বলল, আপু বাকি কথা আবার দেখা হলে বলবো।
-- হুহহ তুমি এটা দিয়ে আমায় কি বুঝাচ্ছো।
-- বুঝালাম তুমিও মামার বাড়ি যাও। দেখবে তোমার কত সখি হবে। ওদের কথার মাঝে আমায় হারিয়ে ফেলবে
-- হুহ মোটেও না। আচ্ছা তুমি এই কৌতুক জানলে কই থেকে?
-- ফেসবুকে পড়ে ছিলাম।
-- তাই তো বলি, রাতে মোবাইল নিয়ে তোমার এতো কিসের কাজ। আমাকে বিদার করতেছো যেন বেশি বেশি ফেসবুক চালাতে পারো আর মেয়েদের সাথে কথা বলতে পারো।
-- হায়রে আজ বুঝলাম গুরুজন কেন বলে, " মেয়ে চরিত্র বেজায় জটিল"। বুঝালাম এক লাইন আর ও বুঝলো ১০০ লাইন।
-- ও আমি বেশি বুঝি।
-- এবার কি ঝগড়া করবে?
-- ও আমি শুধু ঝগড়া করি আর আশে পাশের মেয়েরা তোমায় ভালবাসে।
-- হুমম জানো, আমি শুনছি আমি যখন ছোট ছিলাম তখন নাকি আমাকে সবাই কোলে নিয়ে অনেক আদর করতো।
-- হুহহ যাও এখন আদর খাও।
-- হুমম যাবোই। আমি হয়ত এক মাত্র বিয়ে করা ব্যাচেলার। যে কি না বউ থাকতে বউয়ের সাথে প্রেম করতে পারে না।
-- কি আমি প্রেম করতে পারি না?
-- না তো পারো না। শুধু ঝগড়া করো আর পাশের বাড়িতে তোমার আন্টির কাছে চলে যাও। আর যখন পেটের সব কথা শেষ হয় তখন আমায় ফোন দাও। আবার যখন ওদের সাথে কথা বলতে মন চায় তখন আবার আমার সাথে ঝগড়া করে আর ওই বাসায় চলে যাও।
-- তুমি এইগুলো আমায় বলতে পারলে।
বলেই কান্না শুরু করে দিলো। বলছিলাম না ও অল্পতে কাদেঁ, এটা হলো তার প্রমান। এখন আর আমার সামনে না দাড়িয়ে মায়ের রুমে চলে গেল। কিন্তু একটু পরে ঘটলো ঘটনা। ভাবলাম মাকে নিয়ে এসে আমায় বকা খাওয়াবে কিন্তু উল্টা সে এখন বাবাকে নিয়ে আসছে। যার আসার নাম শুনলেই আমার উপর নিচে সমানে কাপেঁ। এতখন বিথী চুপ করে ছিল আর এখন আমি বাবার সামনে চুপ করে আছি। আর বাবা আমায় ইচ্ছা মত ঝাড়ি দিতেছে। আর মেয়েটা এখন হাসছে আর আঙ্গুল দেখিয়ে বুঝাচ্ছে যে বেশ হয়েছে। তারপর আমাকে বকা শেষ করে বাবা বলল...
.
-- ওই শুন আজ অফিসে যেতে হবে না। তুই বিকেলে আমাদের বাসে তুলে দিস।
-- জ্বী আচ্ছা।
কিছু করার নেই। যতই আমি বাড়িতে ভাব দেখাই না কেন? আমি বাবার সামনে একদম জিরো। আমি যখন আমার প্রথম মাসের বেতন এনে বাবাকে দিয়ে বলছিলাম, বাবা নাও আমার সব তোমার। তখন যে পরিমানে ঝাড়ি খেয়েছিলাম তা বলার মত না। ওনি বলল, " আমি এখনও কাজ করতে পারি। তোর টাকা আমি কেন নিবো। যা তোর মন মত খরচ কর "। এরপর আর কোন দিন বাবাকে বেতনের টাকা দিতে যাই নি। সব মায়ের হাতে দিয়ে দেই আর বাকি কিছু টাকা আমার কাছে রাখি।
.
দুপুরে সবার সাথে টেবিলে বসে খাচ্ছিলাম। তখন বিথী এসে আমাকে দরদ দেখিয়ে মাছের ঝোল দিলো। আর মাছ আর আলু কিছুই নেই বরং শুধু ঝোল। আমি ওর দিকে তাকাতে ও ভেংচি কাটলো। কিছু বলার নেই আর করারও নেই। আমি তো ভুলেই গেছিলাম যে আমি বিবাহিত ব্যাচেলার। বউ থাকতেও কোন ভালবাসা পাই না।
তারপর খাওয়া দাওয়া শেষ করে রুমে গিয়ে একটু শুয়ে পরলাম। আর তখনই মহারানী এমন একটা মুখ নিয়ে ঘরে ডুকলো যেন এই বাড়ি থেকে সে এখনই চলে যাবে কিন্তু আমার সামনে এসে বলল...
-- এই যে শুনো না গো।
-- গলায় এতো পিড়িত কেন? আবার কি বাশঁ দিবে আমায়।
-- আমার ব্যাগটা একটু গুছিয়ে দাও তো। আমি সেই ফাকেঁ একটু সেজেঁ নেই।
-- পারবো না।
-- সত্যি পারবে না তো ।
-- না পারবো না। কি করবে তুমি?
-- বা.........
-- ওই থামো বলছি। বাবাকে ডাকতে যাও কেন? দিচ্ছি তো গুছিয়ে।একটু ধর্য্য ধরতে পারো না হে।
-- এই তো আমার লক্ষি বর।
-- হুমম যাও যাও। তুমি বাসা থেকে গেলে আমি পার্টি দিবে বন্ধুদের নিয়ে। ( আস্তে বললাম)
-- ওই কি বলল?
-- না বলছি কি কি দিতে হবে?
-- যা যা তোমার প্রয়োজনীয় মনে হবে তাই দিয়ো।
-- ওকে।
হুহ নিজে পারে না একটু গুছিয়ে নিতে। আমারে ভালবাসবে না বরং কষ্ট দিবে। হুহ তুমি শুধু এবার যাও, দেখো বাসায় কত্তো মজা করবো।
বিকেলে ব্যাগ নিয়ে দাড়িয়ে আছি। ওদের বাসে তুলে দিবো বলে। তবে বিথীর মনটা একটু খারাপই। আসলে ও আমায় চায় জেলাস ফিল করাতে কিন্তু শেষে নিজেই জেলাস হয়ে থাকে। এখনো রাস্তায় দাড়িয়ে নখ কাটছে। আমি ওর পাশে গিয়ে দাড়ালাম আর তখনই বাস চলে আসলো। ধ্যাত একটু ভালবাসা দেখানোর সময় দিলো না। আজ কেন যে ঠিক টাইমে বাস আসলো।
ওদের বাসে তুলে দিলাম। ওর চোখের দিকে তাকাতে কষ্ট হচ্ছে, যতই ঝগড়া করুক না কেন? অনেক ভালবাসে আমায়। বাস ছেড়ে দিলো আর আমি বাসের দিকে তাকিয়ে রইলাম। তখনই মোবাইলে একটা মেসেজ আসলো।তাকিয়ে দেখি বিথী পাঠাইছে মেসেজটা খুলে দেখি এতে লেখা আছে "এই ভালবাসো আমায়। একটু আটকাতেও চাইলে না। "
পাগলী তুমি যদি একটু ভালবেসে বলতে তোমায় আটকাতে তাহলে যেভাবেই হোক আমি আটকাতাম।
.
তারপর আমি বাড়িতে চলে আসলাম। আর বাড়িতে এসেই মোবাইলটা বের করে নাসির আর দূর্জয়কে ফোন দিয়ে বলে দিলাম আজ আমার বাসায় চলে আসতে। সারা রাত মিলে মাস্তি করবো। যেহেতু আমি বিবাহিত ব্যাচেলার সেহেতু এর থেকে ভাল শুধু ব্যাচেলার হয়ে থাকাও ভালো।
রাতে যথারীতি সব গুলো চলে আসলো আর আসার সময় বাইরে থেকে খাবার কিনে আসছে।আর এর সাথে একটু বিয়ার তো চলেই। বিথী জানে যে আমি বিয়ের আগে মাঝে মাঝে এটা খেতাম। তবে আমি ওর কাছে প্রমিস করছিলাম যে দিন আমি অনেক খুশি হবো ওই দিন একটু খাবো। আজ মনে কষ্ট থাকলেও খুশি আছে তাই খাবো।
সারা রাত ইচ্ছা মত মাস্তি করলাম। সারা রাত বক্স চালিয়ে নাচলাম, বিয়ার খেলাম।
ঘুম ভাঙ্গলো সকাল ১১টার পরে। তখন খেয়াল হলো আরে অফিস তো মিস হয়ে গেল। ইশ বিথী থাকলে হয়ত এই সমস্যা টা হতো না। নাসির আর দূর্জয় তখনও ঘুমাচ্ছে। ওদের ডাক দিলাম। আর তিনটায় কোন রকমে রেডি হয়ে অফিসে চলে গেলাম। সাড়া দিন মাথার উপর দিয়ে গেল। আর মোবাইল তো কাল রাত থেকেই বন্ধ। দেরি করে অফিসে যাওয়ার জন্য এমনি খেলাম বকা। তারপর কাজের চাপে মোবাইলেরর কথা মনে নেই।
বাসায় আসলাম ১০ টা বাজে। বাসায় এসে মোবাইলটা চার্জে দিলাম। তখন ফ্রেশ হতে গেলাম। আর ফ্রেশ হয়ে এসে খাবার টেবিলে গিয়ে দেখি কোন খাবার নেই। তাই ফ্রিজ থেকে দুইটা আপেল খেতে খেতে মোবাইলটা অন করলাম আর বিথীকে ফোন দিলাম। কিন্তু বিথীর মোবাইল তো বন্ধ। এখন একটু টেনশন হচ্ছে।
হঠাৎ কলিং বেলটা বেজেঁ উঠলো। এতো রাতে আবার কে আসলো? তাই কৌতুহল নিয়ে দরজার কাছে গিয়ে দরজার কাছে গিয়ে জানতে চাইলাম....
.
-- কে?
-- ওই দরজা খুলো। (ওই পাশ থেকে বিথীর আওয়াজ)
আমি দরজাটা খুলতেই ও দৌড়ে এসে আমার জড়িয়ে ধরলো। ও খুব কাদচ্ছে। সাড়া দিন কথা হয় নি বলে হয়ত মেয়েটা অনেক কষ্ট পেয়েছে।
-- আরে কি হলো এতো কাদচ্ছো কেন?
--( কেদেই চলেছে)
-- আরে এতো কান্না করলে তো বাংলাদেশের মানুষের মাঝে বন্যা হওয়া আশংকা আরো বেড়ে যাবে।
-- তুমি সাড়া দিন আমায় ফোন দাও নি কেন?
-- আরে মোবাইল বন্ধ ছিল আর কাজের চাপ ছিল।
-- হুহ দেখি মোবাইলটা।
-- এই যে...
-- কি বন্ধ? মোবাইল তো চালু।
-- আরে তোমায় ফোন দিবো বলে চার্জ দিয়ে অন করলাম।
-- বাহ্ আর মিথ্যা বলতে হবে না। আমায় সাড়া দিন কাদিঁয়ে এখন মিথ্যা বলা হচ্ছে।
-- সত্যি বলছি তো।
-- একদম চুপ। সাড়া দিন কি কিছু খাওয়া হইছে নাকি...
-- না গো এখনো খানি।
-- আচ্ছা তুমি ঘর থেকে গিটারটা নিয়ে এসে গান গাও আর আমি রান্না বসাচ্ছি।
-- খালি পেটে গান আসবে।
-- না আসলেও গাইতে হবে। এটা হলো আমায় সাড়া দিনে খুজঁ না নেওয়ার শাস্তি।
-- মাফ করা যায় না।
-- একদম না।
-- আচ্ছা যাও তাই হোক।
ও রান্না করতে চলে গেল আর আমিও গিটারটা আনতে গেলাম কিন্তু তখনই চোখে পরলো বিয়ারের বোতল গুলো। হায়রে এগুলো যদি বিথী দেখে তাহলে আমায় ইচ্ছা মত দিবে। আমি তারাতারি এই গুলো পরিষ্কার করতে যাবো তখনই দেখি বিথী আমার সামনে.....
-- আমি চলে যাওয়ার খুব খুশি হইছিলে তাই না।
-- আরে না। বন্ধুরা মিলে ব্যাচেলার পার্টি করছিলাম। আমি সত্যি বলছি।
আমার কথা শেষ না হতেই আবার কেদেঁ দিলো।
-- আরে আবার কাদঁছো কেন?
-- আমায় চলে যাওয়ায় তুমি খুশি বলে।
-- আরে না না। সত্যি বলছি।
-- তাহলে প্রমিস করো আর কখনো এই গুলো খাবে না।
-- একটু....
-- কী বললে??
-- বললাম একটুও খাবো না প্রমিস।
-- মনে থাকে যেন।
বলেই আমার বউ রান্না ঘরে চলে গেল আর আমি ঘর পরিষ্কার করতে লাগলাম। আরে ওরে তো গান শুনাতে হবে। আমি এখন গিয়ে গান গাইতে গেলাম।

লেখা: Papon Das Raj(কলা গাছের বান্দর)

1 comment:

Powered by Blogger.